PC Header Top Ads

Type Here to Get Search Results !

Display Responsive Ads

ফ্যাটে দ্রবণীয় ভিটামিন


ভিটামিন A বা রেটিনল

ভিটামিন A-র রাসায়নিক নাম রেটিনল। তাপ প্রয়ােগে এটি নষ্ট হয় না। বিটা-ক্যারােটিন হল এর প্রধান প্রােভিটামিন। ক্যারােটিনেজ নামক উৎসেচকের ক্রিয়ার বিটা-ক্যারােটিন ক্ষুদ্রান্ত্রে ভিটামিন A সংশ্লেষ করে। A ভিটামিনটি অ্যান্টিজেনরা ফথ্যালমিক ফ্যাক্টর নামেও পরিচিত।


ভিটামিন A-এর উৎস

  • (i) উদ্ভিজ্জ ও গাজর, বিট, টম্যাটো, পাকা পেঁপে, আম ইত্যাদি লাল বা হলুদ রঙের ফল, পালং ও নটে শাক, কারি পাতা ইত্যাদি। 
  • (ii) প্রাণীজ ও হ্যালিবাট ও কড মাছের যকৃৎ-তেল; এছাড়া মাখন, ডিমের কুসুম, চিজ, মাছ, দুধ ইত্যাদি।


ভিটামিন A-এর অভাবজনিত লক্ষণ 

  •  ভিটামিন A-র অভাবে রাতকানা বা নিকটাললাপিয়া রােগ হয়। এই রােগে মৃদু আলােতে কোনাে বস্তু দৃষ্টিগােচর হয় না। চোখের রড কোশের রােডােপসিন রঞ্জকের উৎপাদন ব্যাহত হয়। জন্য এই সমস্যা সৃষ্টি হয়। 
  •  এই ভিটামিনের অভাবে অণুগ্রন্থির ক্ষরণ কমে যায়, ফলে অক্ষিগােলক শুষ্ক হয়ে যায়। এরপর চোখের সামনের করনিয়া স্তর শুকিয়ে যায় এবং চোখে ছানি পড়ে। এই রােগকে কেরাটোম্যালেসিয়া বলে।
  • শেষ অবধি চোখের আইরিস, লেন্স এবং সর্বোপরি রেটিনাস্তর নষ্ট হয়ে গিয়ে অন্ধত্ব বা জেরফথ্যালমিয়া রােগ সৃষ্টি করে
  • দেহত্বক শুষ্ক ও খসখসে ক্যারােটিন একটি রঞ্জক যার বর্ণ লাল বা হলুদ হয়ে হয়ে ফেটে যায়। একে ফ্রিনােডার্মা বলে।
  • বৃক্ক, মূত্রনালি এবং শ্বাসনালির আবরণী কলা নষ্ট হয়ে তা সংক্রামিত হয়।
  • ভিটামিন A-র অভাবে বৃক্কয় পাথর সৃষ্টি হয়।
  • এর অভাবে করােটি ও মেরুদণ্ডের কোনাে কোনাে হাড়ের অতিরিক্ত বৃদ্ধি হয়, ফলে স্নায়বিকতন্ত্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।




ভিটামিন D বা ক্যালসিফেরল

ফ্যাটে দ্রবণীয় ভিটামিন D-র রাসায়নিক নাম ক্যালসিফেরল। রিকেট রােগ প্রতিরােধ করে বলে এর অপর নাম অ্যান্টির্যাকাইটিক ফ্যাক্টর। 


ভিটামিন D-এর উৎস

  • (i) উদ্ভিজ্জ: উদ্ভিজ্জ উৎসে ভিটামিন D কম পাওয়া যায়। তবে বাঁধাকপি, ইস্ট ও উদ্ভিজ্জ তেলে কম মাত্রায় ভিটামিন D থাকে। 
  • (i) প্রাণীজ: মাছের যকৃতের তেল, বিশেষত কড, হাঙর ও হ্যালিবাট মাছের যকৃৎ-তেল, ডিমের কুসুম, মাখন, মাছের তেল,দুধ হল ভিটামিন D-র উৎস। 
  • (iii) অন্যান্য ও সূর্যালােকের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ত্বকে 7-ডিহাইড্রোকোলেস্টেরল প্রােভিটামিন থেকে ভিটামিন D সংশ্লেষিত হয়।


ভিটামিন D-এর অভাবজনিত লক্ষণ

  • 1. রিকেট: ৬ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত শিশুদের নতুন হাড়ে ক্যালশিয়াম ও ফসফরাস যুক্ত হয় । ভিটামিন D-র অভাবে হাড়ে ক্যালশিয়াম বা ফসফরাস শােষণ হয় না, ফলে তা দুর্বল, বক্র, ভঙ্গুর হয়। শিশুদের এই রােগকে রিকেট বলে। 

  • 2. অস্টিওম্যালেসিয়া : পরিণত বয়সে ভিটামিন D-র অভাবে (বিশেষত গর্ভাবস্থায় ও স্তনদায়ী মায়ের) হাড় পলকা হয়, ফলে তা চট করে ভেঙে যায়। এছাড়াও এই রােগে মেরুদণ্ড বেঁকে যায়, ফলে অনেক সময় হাতে ভর দিয়ে চলতে হয়। 

  • 3. ভিটামিন D-র অভাবে দাঁতের বৃদ্ধি ব্যাহত হয় ও তার বিকৃতি ঘটে। 

  • 4. রক্তে ক্যালশিয়ামের মাত্রা হ্রাস পায় ও ক্যালশিয়াম বিপাক ব্যাহত হয়।




ভিটামিন E বা টোকোফেরল

ফ্যাটে দ্রবণীয় ভিটামিন E-র রাসায়নিক নাম টোকোফেরল। এই ভিটামিনটি মহিলাদের বন্ধ্যাত্ব প্রতিরােধ করে বলে একে অ্যান্টিস্টেরিলিটি ফ্যাক্টর বলে।


ভিটামিন E-এর উৎস

  • (i) উদ্ভিজ্জঃ উদ্ভিজ্জ খাদ্যে এই ভিটামিনটি বেশি থাকে, যেমন—অঙ্কুরিত ছােলা, সয়াবিন ও সূর্যমুখী বীজের তেল, পাম তেল, গমের অঙ্কুর নিঃসৃত তেল, মটরশুটি, নটে ও লেটুস শাক, বাদাম, সয়াবিন ইত্যাদি। 
  • (i) প্রাণীজঃ ডিমের কুসুম, যকৃৎ ও দুধ (সামান্য পরিমাণে)।


ভিটামিন E-এর অভাবজনিত লক্ষণ

  • 1. বন্ধ্যাত্ব: মহিলাদের (এবং পুরুষদের, উভয় ক্ষেত্রেই) এর অভাবে বন্ধ্যাত্ব ঘটে অর্থাৎ নিষেকের দ্বারা ভ্রুণগঠনে বাধা পায় অথবা প্রজননে বিপত্তি ঘটে। 
  • 2. পেশি ক্ষয় ও পেশি দুর্বল হয়ে যায় ও তার কাজে অসমন্বয় ঘটে। 

  • 3. মাতৃদেহে দুধক্ষরণ ক্ষমতা হ্রাস পায়। 
  • 4. পেশি ক্ষয় হয় ও লােহিত রক্তকোশ ভঙ্গুর হয়ে পড়ে।




ভিটামিন K বা ফাইলােকুইনোন বা ন্যাপথােকুইনোন

ফ্যাটে দ্রবণীয় এই ভিটামিনটির রাসায়নিক নাম ফাইলােকুইনােন বা ন্যাপথােকুইনোন। রক্তক্ষরণ বা হ্যামারেজ প্রতিরােধ করার জন্য এর অপর নাম অ্যান্টিহ্যামারেজিক ফ্যাক্টর। পিত্তলবণের সাহায্যে অন্ত্রে এই ভিটামিনটি শােষিত হয়।


ভিটামিন K-এর উৎস

  • (i) উদ্ভিজ্জঃ গাঢ় সবুজ সবজি, যেমন—পালং শাক, বাঁধাকপি ও ফুলকপি, আলফালফা, লেটুস শাক, মটর ইত্যাদি এর উৎস। 
  • (ii) প্রাণীজঃ যকৃৎ, মাংস, ডিম ও দুধ। 
  • (iii) অন্যান্য ও মানুষের কোলনে বসবাসকারী স্বাভাবিক ব্যাকটেরিয়া কোলােনি পিত্তরসের উপস্থিতিতে ভিটামিন K সংশ্লেষ করে।


ভিটামিন K-এর অভাবজনিত লক্ষণ 

  • (i) রক্তক্ষরণ বা হ্যামারেজ ও রক্ত তঞ্জনে বিলম্ব ও ভিটামিন K-র অভাবে রক্ততঞ্জন ব্যাহত হয়। যকৃতে প্রােথ্রাম্বিন ও অন্যান্য রক্ত তঞ্জনের উপাদানগুলি সংশ্লেষে ভিটামিন K অবশ্য প্রয়ােজনীয়। সেই কারণে এই ভিটামিনটির অভাবে ক্ষতস্থানে রক্ত সহজে জমাট বাঁধে না ও রক্ত ক্ষরণ হয়।
  • (2) এর অভাবে পিত্তক্ষরণ ব্যাহত হয়। 
  • (3) রক্তে প্রােথ্রাম্বিনের মাত্রা কমে যায়।




প্রশ্ন উত্তর


১. ভিটামিন ডি এর রাসায়নিক নাম কি?
উঃ ক্যালসিফেরল

২. ভিটামিন ডি কে আবিষ্কার করেন?
উঃ এলমার ম্যাকলাম

৩. ভিটামিন d এর অভাবে কি রোগ হয়?
উঃ শিশুদের রিকেট ও বড়োদের অস্টিওম্যালেসিয়া

৪. ভিটামিন কে আবিষ্কার করেন?
উঃ স্যার ফ্রেডরিক গোল্যান্ড হপকিন্স

৫. ভিটামিন কয় প্রকার ও কি কি?
উঃ ফ্যাটে দ্রবণীয় ভিটামিন A, D, E, K
জলে দ্রবণীয় ভিটামিন C, B-কমপেলেক্স

৬. ভিটামিন k এর রাসায়নিক নাম কি?
উঃ ফাইলোকুইনোন বা ন্যাপথোকুইনোন

৭. ভিটামিন k এর অভাবে কি রোগ হয়?
উঃ রাক্ত জমাট বাঁধে না, রক্ত ‌ক্ষরণ হয়।

৮. ফ্যাটে দ্রবণীয় ভিটামিন গুলির নাম কি?
উঃ A, D, E ও K

৯. ভিটামিন এ এর রাসায়নিক নাম কি?
উঃ রেটিনল

১০. ভিটামিন e এর রাসায়নিক নাম কি?
উঃ টোকোফেরল

১১. ভিটামিন বেশি খেলে কি হয়?
উঃ রক্ত পাতলা হয় ও রক্তক্ষরণ হয়।

১২. ভিটামিন ই এর সবচেয়ে ভালো উৎস কি?
উঃ অঙ্কুরিত ছোলা, গমের অঙ্কুর নিঃসৃত তেল সয়াবিন ইত্যাদি।

১৩. ভিটামিন e এর অভাবে কি রোগ হয়?
উঃ পুরুষ ও মহিলাদের বন্ধ্যাত্ব, পেশি ক্ষয়।

১৪. ভিটামিন ডি বেশি খেলে কি হয়?
উঃ বৃক্কে পাথর, বৃক্কএ সমস্যা, হাড়ের ব্যাথা।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Section