PC Header Top Ads

Type Here to Get Search Results !

Display Responsive Ads

থাইরয়েড হরমোনের কাজ


থাইরয়েড গ্রন্থি গ্রীবাদেশে স্বরযন্ত্রের নিচে শ্বাসনালী দুপাশে দ্বিতীয় তৃতীয় ও চতুর্থ তরুণাস্থির সম্মুখে অবস্থিত।

থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে তিন রকমের হরমোন নিঃসৃত হয় যেমন- ট্রাই আয়োডোথাইরোনিন, থাইরক্সিন বা টেট্রাআয়োডোথারোনিন এবং থাইরোক্যালসিটোলিন।



থাইরয়েড হরমোনের শারীরবৃত্তীয় কাজঃ


১. শক্তি উৎপাদন বা BMR নিয়ন্ত্রণঃ

থাইরয়েড নিঃসৃত হরমোন কলাকোষে শক্তি উৎপাদন, অক্সিজেন গ্রহণ ও মৌল বিপাকীয় হার ত্বরান্বিত করে অর্থাৎ BMR বৃদ্ধি করে। প্রতি মিলিগ্রাম থাইরয়েড হরমোন প্রায় ১০০০ ক্যালরি BMR বৃদ্ধি করে।


২. কার্বোহাইড্রেট বিপাক নিয়ন্ত্রণঃ

থাইরয়েড হরমোন গ্লাইকোজেন বিশ্লেষণ ঘটিয়ে রক্ত শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে। থাইরয়েড হরমোন অন্ত্রে গ্লুকোজ ও গ্যালকটোজের শোষণ ত্বরান্বিত করে।


৩. প্রোটিন বিপাক নিয়ন্ত্রণঃ

থাইরয়েড হরমোন প্রোটিন সংশ্লেষণ বৃদ্ধি করে। এছাড়া বিভিন্ন উৎসেচকের সংশ্লেষ ঘটায়।


৪. ফ্যাট বিপাক নিয়ন্ত্রণঃ

থাইরয়েড হরমোন ফ্যাট সংশ্লেষ, স্থানান্তরণ এবং ভাঙ্গনকে প্রভাবিত করে। এছাড়া কোলেস্টেরল সংশ্লেষ ঘটায়।


৫. আয়োডিন বিপাকঃ

থাইরয়েড হরমোন অজৈব আয়োডিনের শোষণে ও আয়োডাইডের আয়োডিন জারিত হতে এবং মনোআয়াডোটাইরোসিন ও ডাইআয়োডোটাইরোসিন গঠনে সাহায্য করে।


৬. রক্ত কণিকার বিপাক ক্রিয়াঃ

থাইরয়েড হরমোন লোহিত রক্তকণিকার ক্রম পরিণতিতে সাহায্য করে।


৭. হৃদপিন্ডের বিপাক ক্রিয়াঃ

থাইরয়েড হরমোন হৃদগতি বৃদ্ধি করে, এছাড়া রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে হৃদ্-উৎপাদ বৃদ্ধি পায়।


৮. শ্বাসন ক্রিয়ার উপর ক্রিয়াঃ

থাইরয়েড হরমোন বিপাক ক্রিয়ার হার বৃদ্ধি করে, O2 এর ব্যবহার ও CO2 উৎপাদন বৃদ্ধি করে ফলে শ্বাসন হার গভীরতা বৃদ্ধি পায়।


৯. দুগ্ধ নিঃসরণঃ

থাইরয়েড হরমোন স্তনগ্রন্থিতে দুগ্ধ উৎপাদন ও স্তন গ্রন্থি থেকে দুগ্ধ ক্ষরণ ঘটায়।


১০. পৌষ্টিক তন্ত্রের উপর ক্রিয়াঃ

থাইরয়েড হরমোন খিদে বাড়ায়। পাচকরস নিঃসরণের পরিমাণ বাড়ায় এবং পাকঅন্ত্রীয় সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়।


১১. কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের উপর প্রভাবঃ

থাইরয়েড হরমোন মস্তিষ্কের সেরিব্রাল কর্টেক্সের সক্রিয়তা বৃদ্ধি করে।


১২. মানসিক বিকাশঃ

থাইরয়েড হরমোন শিশুর মানসিক বিকাশ ঘটায়। থাইরয়েড হরমোন কম হলে শিশু জড়বৃদ্ধি সম্পন্ন হয়।





থাইরয়েড গ্রন্থির স্বল্প সক্রিয়তার ফলঃ


থাইরয়েড গ্রন্থির ক্ষরণ কম হলে শিশুদের ক্রোটিনিজম ও বড়দের মিক্সিডিমা রোগ লক্ষণ প্রকাশ পায়।


ক্রেটিনিজমঃ

  • শিশুর মাথা তুলে রাখা, কথা বলা, দাড়ানো, দন্তোদগম ইত্যাদি সবই বিলম্বিত হয়।
  • ত্বক খসখসে, কর্কশ, স্থুল ও কোঁচকানো হয় এবং ত্বকে লোম কম থাকে।
  • মুখ থেকে অনবরত লালা নিঃসরণ হয় এবং পেট বড় হয়ে যায়।
  • খিদে কমে যায় এবং পাক অন্ত্রীয় নালির সঞ্চালন রাস পায়।
  • মানসিক বিকাশ সঠিক না হওয়ায় শিশু  জড়বুদ্ধি সম্পন্ন এবং মুখমন্ডলে বোকা ভাব লক্ষ্য করা যায়।




মিক্সিডিমাঃ

  • অবসাদ এবং তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব তৈরি হয়। ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা ঘুম হয়।
  • BMR মারাত্মকভাবে হ্রাস পায়।
  • চূড়ান্ত পেশী নিষ্ক্রিয়তা
  • হৃদস্পন্দন হারের নিম্নগতি
  • হৃদ্ উৎপাত হ্রাস
  • রক্তের আয়তন হ্রাস
  • কোন কোন ক্ষেত্রে দেহের ওজন বেড়ে যায়
  • চুলের বৃদ্ধি কমে যায় এবং ত্বক খসখসে হয়
  • মানসিক অবসাদ
  • গলার স্বর ব্যাঙের মতো কর্কশ হয়
  • কোষ্ঠকাঠিন্য হয়
  • মুখমন্ডল ফুলে যায়
  • রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়





থাইরয়েড গ্রন্থির অতি সক্রিয়তা ফলঃ


থাইরয়েড গ্রন্থির হরমোনের আধিক্ ক্ষরণের ফলে গয়টার বা স্ফীতনেত্র গলগন্ড রোগ হয়। এই রোগের লক্ষণ গুলি হল-


  • একটি অধিক উত্তেজনা জনিত অবস্থা।
  • তাপ অসহিষ্ণুতা
  • অতিরিক্ত ঘাম নিঃসরণ
  • মাঝারি থেকে অত্যাধিক ওজন ও দেহে সঞ্চিত স্নেহপদার্থ হ্রাস
  • বিভিন্ন মাত্রার ডায়রিয়া
  • বেশি দুর্বলতা
  • কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা
  • অত্যাধিক অবসাদ কিন্তু ঘুমে অক্ষমতা
  • হাতের কম্পন
  • বাহু প্রসরনের ফলে দেহত্বক অধিকতর কোমল, আদ্র ও রক্তিমাভ হয়
  • BMR ১০ থেকে ১০০ গুণ বেড়ে যায়
  • হৃদস্পন্দন হার বেড়ে যায়
  • রক্ত শর্করার বৃদ্ধি, গ্লুকোজ সহিষ্ণুতর হ্রাস ও আয়োডিনের পরিমাণ বৃদ্ধি
  • ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের অত্যাধিক অবক্ষয়ের ফলে দেহাস্থি রন্ধ্রযুক্ত হয়।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Section