PC Header Top Ads

Type Here to Get Search Results !

Display Responsive Ads

নদীমাতৃক সভ্যতা গড়ে ওঠার কারণ

নদীমাতৃক সভ্যতা গড়ে ওঠার কারণ
etcbangla.com


নদীমাতৃক সভ্যতা গড়ে ওঠার কারণ কি?

অথবা

প্রাচীনকালে সভ্যতাগুলি নদীর আসেপাশে গড়ে উঠেছিল কেন?অথবা

নদীমাতৃক সভ্যতা গড়ে ওঠার ফলে কি সুবিধা হয়েছিল?




প্রাচীন কালে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় নদীমাতৃক সভ্যতা গড়ে ওঠার পেছনে বিভিন্ন কারণ ছিল। যেগুলি হলো--


1. উর্বর কৃষিজমিঃ  আদিম মানুষ লক্ষ করেছিল যে,  নদীতে প্লাবনের ফলে নদীর দুকূল ছাপিয়ে যখন বন্যার জল উপত্যকা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে তখন উপকূল অঞ্চলে নদীর পলিমাটি সঞ্চিত হয়। এই পলিমাটি সমৃদ্ধ জমি খুবই উর্বর এবং এই জমিতে তুলনামূলকভাবে বেশী ফসল উৎপাদিত হয়।



2. জলসেচের সুবিধাঃ  

নদীর উপকূল অঞ্চলে চাষবাস করলে জলসেচের সুবিধা পাওয়া যায়। নদীতে বাঁধ দিয়ে এবং সেখান থেকে খাল কেটে কৃষিজমিতে জলসেচ করা সম্ভব হয়। জলসেচের ফলে কৃষি উৎপাদন যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়। কৃষি উৎপাদনের সুবিধার্থে অদিম মানুষ দলবদ্ধভাবে বিভিন্ন নদীর উপত্যকা অঞ্চলে বসতি গড়ে তুলেছিল।



3. পশুপালনের সুবিধাঃ  

নদী হ্রদ বা দীঘির তীরবর্তী অঞ্চল যথেষ্ট উর্বর হওয়ায় এবং সেখানে জলের সরবরাহ থাকায় জলাশয় সংলগ্ন বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তৃণভূমির প্রসার ঘটত। এই তৃণভূমি আদিম মানুষের পশুপালনের পক্ষে বিশেষ সহায়ক হত। কেন-না, মানুষের গৃহপালিত পশুর অধিকাংশই হত তৃণভোজী। মানুষ নদী-উপত্যকা বা হ্রদের নিকটবর্তী বিস্তৃত তৃণভূমি অঞ্চলে পশুচারণ করতে পারত। পশুপালনের ক্ষেত্রে নদী বা হ্রদের তীরে বসবাস করাই আদিম মানুষের পক্ষে বিশেষ সুবিধাজনক ছিল।



4. পণ্য পরিবহন ও যাতায়াতের সুবিধাঃ  

প্রাচীন কালে স্থলপথে দূরদূরান্তে যাতায়াত বা পণ্য পরিবহনের বিশেষ সুযোগসুবিধা ছিল না। নদীর তীরে বসবাস করলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত এবং পণ্য পরিবহনের বিশেষ সুবিধা হয়- এই বিষয়টি আদিম মানুষ ভালোভাবেই উপলদ্ধি করেছিল। কৃষিকাজ শুরু করার পর উৎপাদিত শষ্য ও অন্যান্য পণ্য দূরাদূরান্তে পাঠানোর জন্য নদীপথই ছিল সবচেয়ে উপযোগী।



5. মাছ শিকারঃ

  আদিম মানুষ যখন যাযাবর জীবন ছেড়ে কৃষিকাজে নিযুক্ত হল তখন শিকার করে মাংস সংগ্রহের পরিমাণ কমতে শুরু করল। কিন্তু নদীর তীরে বসবাস করে মানুষ তা পুষিয়ে নিতে পারেল মছ ধরে। নদী ও হ্রদে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। মানুষ তখনকার অনুন্নত হাতিয়ার ব্যবহার করেই নদী থেকে প্রচুর মাছ ধরত। উৎপাদিত খাদ্যশষ্য এবং নদীর মাছ ধরার ফলে তখনকার মানুষের খাদ্যের কোনো অভাব হত না।



6. অধিক নিরাপত্তাঃ 

  আদিম যুগে শিকার, সম্পদ সংগ্রহ ও অন্যান্য কারণে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষ। বাধত। তাই প্রতিটি জনগোষ্ঠীর কাছে নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মানুষ উপলব্ধি করেছিল যে, জলভাগহীন বিস্তীর্ণ স্থলভাগে বসবাস করলে যখন তখন অন্য গোষ্ঠীর দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকে। কিন্তু নদীর জলরাশি অতিক্রম করে সহসা এরূপ আক্রমণ সম্ভব নয়। তাই প্রাকৃতিক নিরাপত্তার কারণেও মানুষ নদীর তীরে বসবাস করত।



7. অনুকূল আবহাওয়াঃ

  নদী বা বড়ো জলাশয়ের ধারে আবহাওয়া তুলনামূলকভাবে আরামদায়ক হয়। জলরাশি থেকে দূরবর্তী স্থানে গ্রীষ্মকালে বেশি গরম এবং শীতকালে বেশি শীত অনুভূত হয়। কিন্তু জলাশয়ের নিকটবর্তী অঞ্চলে আবহাওয়া সেই তুলনায় নাতিশীতোষ্ণ হয়। এজন্য নদী বা বড়ো হ্রদের উপকূলে প্রাচীন মানুষ তাদের বসতি গড়ে তুলতে চাইত।



8. পানীয় জলের সুবিধাঃ

  আদিম মানুষের কাছে পানীয় জলের একমাত্র উৎস ছিল নদীনালা বা হ্রদের জল। পানীয় জল প্রাপ্তির সুবিধার কারণে আদিম মানুষ নদী-তীরবর্তী অঞ্চলে বসতি গড়ে তোলে। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Section