PC Header Top Ads

Type Here to Get Search Results !

Display Responsive Ads

নিম্নলিখিত কারণে ভারতীয় কৃষিতে জলসেচের প্রয়োজনীয় ও গুরুত্ব


জলসেচ ব্যবস্থা কাকে বলে?

কোন নির্দিষ্ট জমিতে অধিক পরিমাণে ফসল উৎপাদনের জন্য সঠিক মাত্রায় ও সঠিক সময়ে কৃত্রিম উপায়ে জল সরবরাহকে জলসেচ বল। 


ভারতের জলসেচ ব্যবস্থাঃ

বর্তমানে ভারতের মোট চাষযোগ্য জমির ৪৬% জলসেচের অন্তর্ভুক্ত। ২০১০ সালের মধ্যে জলসেচের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬৪%। সেচ সেবিত মোট জমির পরিমাণ পৃথিবীর মধ্যে ভারতে সবচেয়ে বেশি। যদিও আজও ভারতের সমগ্র জল সম্পদের সঠিক সমীক্ষা হয়ে ওঠেনি তথাপি ভারত বিশ্বে জল সম্পদের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করেছ।


ভারতের কৃষিতে জলসেচের গুরুত্বঃ

ভারত কৃষিপ্রধান দেশ। অধিক ফসল উৎপাদনে জলসেচ একটি অপরিহার্য বিষয়। বীজের অঙ্কুরোদগম, গাছের বৃদ্ধি ও পুষ্টি নির্ভর করে সঠিক সময়ে জলের সরবরাহের ওপর। সঠিক সময় এবং ফসলের প্রয়োজনমত জলের যোগান কেবলমাত্র জলসেচের মাধ্যমেই সম্ভব।



ভারতের কৃষিতে জল সেচের প্রয়োজন হয় কেন?

       

ক. প্রাকৃতিক কারণসমূহঃ

(১) মৌসুমি বৃষ্টিপাতের অনিশ্চয়তা:   ভারতের ৮০% বৃষ্টিপাত মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ঘটে। ভারতে মৌসুমী বায়ুর আগম ও প্রত্যাবর্তন উভয়ই অনিশ্চয়ত কোন বছর মৌসুমী বায়ু আগে আবার কোন বছর পরে আসে।

(২) বৃষ্টিপাতের অসম বন্টন:   ভারতের সর্বত্র বর্ষাকালে সমান বৃষ্টিপাত হয় না। ভারতের যেসব এলাকায় স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ( ৭৫ সে.মি.) কম হয় সেই সব অঞ্চলে জল সেচের প্রয়োজন হয়। ভারতের প্রায় ৩৫% এলাকা খরা প্রবণ এবং ১৮.৫% এলাকা খরা প্রবণ। এইসব অঞ্চলে জলসেচ ছাড়া কৃষি কাজ সম্ভব হয় না।

(৩) বৃষ্টিপাতের পরিমাণের পার্থক্য:   ভারতে সব বছর সমান বৃষ্টিপাত হয় না। যে বছর কম বৃষ্টিপাত হয় সে বছর কৃষিকার্যে জলসেচের প্রয়োজন হয়। 

(৪) শীতকালীন বৃষ্টিপাতের অভাব:   মৌসুমি জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী শীতকালে ভারতে বৃষ্টিপাত খুবই কম (১৪%) হয়। ফলে শীতকালে রবি শস্য চাষের জন্য ভারতে জলসেচের প্রয়োজন হয়। 

(৫) অতিরিক্ত বাষ্পীভবন:   ভারতের বেশিরভাগ অংশ ক্রান্তীয় মৌসুমী অঞ্চলের অন্তর্গত হওয়ায় এই অঞ্চলে বাষ্পীভবনের হার বেশি। আবার দক্ষিণ ও উত্তর-পশ্চিম ভারতে বাষ্পীভবনের হার আরও বেশি বলে মৃত্তিকা শুষ্ক থাকে। ফলে এই অঞ্চলগুলিতে জলসেচ ছাড়া কৃষিকাজ সম্ভব হয় না।

(৬) মৃত্তিকার জলধারণ ক্ষমতা:   ভারতের সব মৃত্তিকার জলধারণ ক্ষমতা সমান নয়। যে সব অঞ্চলের মৃত্তিকার জলধারণ ক্ষমতা কম সেইসব অঞ্চলের কৃষিকাজের জন্য জলসেচ আবশ্যক।


খ. মানবিক কারণসমূহঃ 


 (৭) অধিক ফসল উৎপাদন বা সবুজ বিপ্লব:   ভারতে অধিক ফসল উৎপাদনের কর্মসূচি বা সবুজ বিপ্লব পর্যাপ্ত জলসেচের সুযোগ না থাকলে সম্ভব হতো না।

(৮) উচ্চফলনশীল শস্যের চাষ:   ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি জন্য উচ্চফলনশীল বীজের প্রয়োজন হয়। উচ্চফলনশীল শস্যের জন্য বৃষ্টিপাত অপেক্ষা সময় মতো ও পরিমিত সেচযুক্ত জলের বেশি প্রয়োজন হয়।

(৯) একই জমিতে একাধিক ফসলের চাষ:   একই জমি থেকে বছরে একাধিক ফসল উৎপাদন করতে হলে জলসেচের সুযোগ থাকা দরকার।

(১০) রাসায়নিক সারের ব্যবহার:   ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয়। জমিতে রাসায়নিক সার প্রয়োগ জলসেচ ছাড়া সম্ভব নয়।

(১১) বিভিন্ন শস্যের জলের চাহিদার বিভিন্নতা:   বিভিন্ন শস্যের জল গ্রহণ করার ক্ষমতা বিভিন্ন প্রকার। ধান, ইক্ষু, বাদাম, তুলা, আলু প্রভৃতি শস্যের জলের চাহিদা বেশি বলে জলসেচের প্রয়োজন হয়।

(১২) রবি শস্যের চাষ:   ভারতের শীতকালে বৃষ্টিপাত কম হয়। ফলে রবি শস্য চাষের জন্য জলসেচের প্রয়োজন হয়।



ভারতের জলসেচ MCQ



১. প্রাচীন ভারতের জলসেচ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল কেন?

উঃ প্রাচীন কাল থেকে ভারত ছিল কৃষি প্রধান দেশ, তখনকার সময়ে বৃষ্টিপাতের অনিশ্চয়তার কারনে তখনকার শাসকগন সুন্দর জলসেচ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন।


২. ভারতের সর্বাধিক জলসেচ করা হয় কোন পদ্ধতিতে?

উঃ কুপ ও নলকূপ, প্রায় ৩৮ শতাংশ।


৩. অতিক্ষুদ্র জলসেচ কাকে বলে?

উঃ প্রচলিত প্রথাগত জলসেচ ব্যবস্থা ছাড়া অল্প জায়গায় অন্যকোনো কৃষি যন্ত্রের সাহায্যে বৈজ্ঞানিক ভাবে জলসেচ ব্যবস্থাকে অতিক্ষুদ্র জলসেচ বলে।


৪. প্রাচীন ভারতের জলসেচ ব্যবস্থা কেমন ছিল?

উঃ প্রচীকাল থেকেই ভারতে জলসেচ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। তখনকার শাসকগন কৃষিকার্যে জলসেচের জন্য খাল খনন ও খাল সংস্কার করিয়েছিলেন।


৫. ভারতের জলসেচের বিভিন্ন পদ্ধতির নাম কি?

উঃ কূপ, নলকূপ, পুকুর ও জলাশয়, খাল।


৬. পাকিস্তানের জলসেচ ব্যবস্থা কি নামে পরিচিত?

উঃ ক্যারেজ।


৭. পৃথিবীতে মোট সেচসেবিত জমির পরিমাণ সর্বাধিক কোন দেশে বেশি?

উঃ ভারত।




              

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Section