PC Header Top Ads

Type Here to Get Search Results !

Display Responsive Ads

বাজেপ্রতাপপুর-এর উৎস সন্ধানে ।।

বাজেপ্রতাপপুর-এর উৎস সন্ধানে ।। 

www.etcbangla.com
www.etcbangla.com


বাজেপ্রতাপপুর-এর উৎস সন্ধানে ।। 


বর্ধমানের ‘বুড়া রাজা’ তেজচাঁদ বাহাদুরের একমাত্র পুত্র প্রতাপচাঁদ । যষ্ঠ রানী নানকী কুমারীর গর্ভজাত । ডাকাবুকো ও সাহসী । ইংরেজ সিভিল সার্জেন্টরা দু’চোখের বিষ তাঁর । ইংলন্ডের ধোপা নাপিতের সন্তানরাই এদেশে এসে হয় সিভিল সার্জেন্ট বলে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস । এহেন প্রতাপচাঁদ পিতার জীবিতাবস্থায় শুরু করেন বেশ কিছু জমিদারি দেখভালের কাজ। প্রজাকুলে তাই তিনি পরিচিত ‘ছোট রাজা’ বলে। তারপর একদিন মাত্র বছর ত্রিশের যুবক প্রতাপচাঁদ মারা গেলেন কঠিন অসুখে। কালনার গঙ্গায় তড়িঘড়ি তাঁর মৃতদেহ সৎকার করে ভগ্নহৃদয়ে বর্ধমান ফিরলেন রাজা তেজচাঁদ। কিন্তু পারিবারিক রীতি অনুযায়ী দেহ ভস্ম রক্ষার্থে এই প্রথম নির্মিত হল না কোন সমাধি মন্দির। দিন কয়েকের মধ্যে রটে গেল মারা যাননি ছোটরাজা, হয়েছেন অন্তর্হিত। স্বয়ং রাজা তেজচাঁদ স্বগতোক্তি করতেন প্রায়শই ‘প্রতাপ আবার ফিরে আসবে’। ‘বাজেপ্রতাপপুর’ সেই মৃত জমিদার পুত্রের প্রত্যাবর্তনের কাহিনী।

বর্ধমান রাজ পরিবারের কালনার দূর্গাপূজা

পরের গল্প ১৪ বছর পর। ১৮৩৫ সালে গোলাপ বাগের গেটে উপবিষ্ট সন্ন্যাসী কৃষ্ণলাল ব্রহ্মচারী'কে ‘ছোট রাজা’ বলে চিনতে পারে বৃদ্ধ গোপীনাথ ময়রা। প্রতাপচাঁদের দুই রানীর পুরাতন দাসী এবং রাজবাড়ির পুরানো মহুরি কুঞ্জবিহারীও প্রতাপচাঁদ বলে সনাক্ত করে সন্ন্যাসীকে। খবর পেয়ে প্রমাদ গুনলেন বর্তমান জমিদার মহতাপচাঁদ তথা চুনীলালের পিতা পরাণ কপুর। প্রতাপের অবর্তমানে তার পুত্র চুনীলালকেই দত্তকপুত্র হিসেবে গ্রহন করে তাবৎ রাজত্ব দিয়ে গেছেন ভূতপূর্ব রাজা তেজচাঁদ। কালক্ষেপ না করে এক দেওয়ানের নেতৃত্বে বিজয় ও রাম নামের দুজন লেঠেল পাঠিয়ে সন্ন্যাসীকে শহরের সীমানার বাইরে কাঞ্চন নগরে বের করে দিলেন পরাণ। সেদিনের সেই কাঞ্চন নগরই আজকের ‘বাজেপ্রতাপপুর’। আর তার নিকটেই অন্য দুটি জায়গার নাম দেওয়ানদীঘি ও বিজয়রাম।

       গন্তব্য বেলপাহাড়ি ও ঝাড়গ্রাম


নিজেকে ‘প্রতাপচাঁদ’ দাবি করেও বর্ধমান জমিদারি কখনও ফেরৎ পাননি হারিয়ে যাওয়া জমিদার পুত্র। বঙ্গীয় রাজনীতিতে একসময়ে আলোড়ন তোলে ‘জাল প্রতাপ’ মামলাটি। পক্ষে ও বিপক্ষে আড়াআড়ি ভাগ হয়ে যায় সমাজের প্রায় সব শ্রেণীর মানুষ। শেষপর্যন্ত মোকদ্দমায় দোষী সাব্যস্ত হন সন্ন্যাসী। যদিও নাম ভাড়ানোর অপরাধে কোন শাস্তির বিধান তখন ছিল না আইনে। শেষমেশ মোহাম্মদী আইন বলে আত্ম-উপকারের হেতু অন্যের নাম ব্যবহার করার অপরাধে এক হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাস কারাবাসের নিদান হয় সন্ন্যাসীর। তবে আইনত জমিদারি না পেলেও অধিকাংশ প্রজাই তাঁকে মনে করতেন তিনিই আসল প্রতাপচাঁদ। তাঁর বাকি জীবন কাটে হুগলির শ্রীরামপুরে। ১৮৫২ সালে শ্রীরামপুরেই মারা যান তিনি, কালের স্রোতে হারিয়ে যায় ‘জাল প্রতাপচাঁদ’ অধ্যায়। তবে ‘দেওয়ানদীঘি’ ও ‘বিজয়রাম’কে পাশে নিয়ে বর্ধমান শহরের উপকন্ঠে আজও জেগে আছে ‘বাজেপ্রতাপপুর’।।

বাজেপ্রতাপপুর-এর উৎস সন্ধানে ।। 

        

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Section