PC Header Top Ads

Type Here to Get Search Results !

Display Responsive Ads

গন্তব্য বেলপাহাড়ি ও ঝাড়গ্রাম

              গন্তব্য বেলপাহাড়ি ও ঝাড়গ্রাম





7/8/2019-ভোর 4 টা, বৃষ্টি পড়ছে ঝিরি ঝিরি,গাড়ি স্টার্ট দিলাম| গন্তব্য বেলপাহাড়ি ও ঝাড়গ্রাম| যাত্রা শুরু বারাসাত থেকে, আমাকে ধরে সঙ্গী 4 জন.মায়ের মন্দিরে মাথা ঠেকিয়ে যাত্রা শুরু| ফাঁকা রাস্তা গাড়ির গতিবেগ কমবেশি করে ছুটালাম সাথে নিয়ে অনেক বুক ভরা আবেগ আর 98.3 রেডিও মিরচি.
বৃষ্টির দিনের সকালের গানে ও সুরে মন মজেছে. বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে পার এবার পথ দেখালো গুগল বাবা(বাবা তোমার জয় হোক)🤣🤣| গাড়ির চাকা ঘুরলো কোলাঘাট এর দিকে, দিনের আলো উঁকি দিচ্ছে..
আচ্ছা সকাল তো হয়ে এলো একটু চা হবে না ?
উত্তরে কোলাঘাট ছেড়ে গেলে দাঁড়াবো, সম্মতি না দিয়ে পারলাম না. আহা কি তেলের মতন পথ বাবা বিশ্বকর্মা আজ খুশিই হবেই , আর আমাদের ও আরামে যাত্রা করাবে.
দেখতে দেখতে কোলাঘাট পার, এবার যে ইংরেজ দের সকাল সুধা পান করতেই হবে!!
তড়িঘড়ি করে ভালো একটা চা এর দোকানে গাড়ি দাড় করিয়ে হালকা বৃষ্টিতে সকালের চা এ চুমুক. আহা মনে কি আনন্দ. বেশি দেরি করা যাবে না, ওদিকে যে পাহাড় আর জঙ্গল আমাদের অপেক্ষায়.
গাড়ি স্টার্ট করেই গতির উর্ধসীমা ছুঁয়ে গাড়ি চলতে লাগলো এন এইচ 16 দিয়ে|
বেশ কিছু সময় পার করে চোখে যেন সবুজের ভালোবাসার হাত বুলিয়ে গেলো..আর সূর্য মামা মেঘের আড়ালে আলো দিয়ে যাচ্ছে.
মন শুনলো না বললো দাঁড়াতে হবেই.
এক পাশ করে দাঁড়ালাম আর গাড়ি থেকে নেমেই এক ঠান্ডা হওয়ার ছোয়ায় মনদিলো পূর্ণ করে আর তারপর শুরু আমাদের স্বভাব নিজেরদের বদনের চিত্র তোলা.
চললো চিত্র বন্দি আধঘন্টার কাছাকাছি.
খেয়াল আসলো আরে যেতে হবেতো! আবার গাড়ি ছোটালাম আঁকাবাঁকা রাস্তা ধরে...
এসে গেলাম ঝাড়গ্রাম যাওয়ার রাস্তার সামনে..একজনের কাছে সঠিক টা জেনে নিয়ে গাড়ি ঘোরালাম.রাস্তায় সকালের প্রাতরাশ সেরে নিলাম.
গ্রামের পরিবেশ আর পাশ থেকে চলেছে ছোট একটা নদী কি অপূর্ব দৃশ্য .আর অপেক্ষা না! ভালো খারাপ রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে হাজির ঝাড়গ্রাম এ| আবার একটু বিরতি.. আবার সঠিক সাহায্য নিয়ে বেলপাহাড়ির আগে, যেখান থেকে নজরে এলো পাহাড় আর অরণ্য আর ঘ্রানে লাল মাটির গন্ধ..
আমাদের ঘোরার প্ল্যান ছিল একদিনে বেলপাহাড়ি ঘুরে রাতে ঝাড়গ্রাম ফেরত যাবো..সেই মতো ঘোরা শুরু.

 

প্রথম গন্তব্য ঘাগরা জলপ্রপাত: ম্যাপ দেখে কাচা পাকা রাস্তা দিয়ে পৌঁছে গেলাম সেখানে..কিসুন্দর জায়গা, কিসুন্দর প্রকৃতির রূপ, অপূর্ব সে দৃশ্য.. ঘোরা শেষ এবার পালা তারাফেনি নদীবাঁধ. আবার গাড়ি ঘুরিয়ে চললাম সেদিকে, গন্তব্যে পৌঁছে ঘোরা শুরু করতেই কিছুক্ষনের মধ্যে আসলো বৃষ্টি, অগত্যা ঘোরা বন্ধ করে গাড়িতে চেপে ফিরতে হলো..এবার খাওয়ার সময় যে..পেট যে ডাক দিচ্ছে.
হোটেল যে নজরে আসছে না..মানুষের সাহায্য নিতেই হবে..
আচ্ছা দাদা খাবার হোটেল কোথায় আছে জিজ্ঞাসা করতেই এমন উত্তর আশা করিনি, বলে কিনা এখানে তো কোনো হোটেল নেই!!! বলে কী এই লোক..!!
বেলপাহাড়ি বাজারের কাছে পাবেন, কতটা যেতে হবে??
30 মিনিট লাগবে ধরুন..শুনেই মাথা ঘুরে এলো.
যাইহোক খেতেহবে তাই যেতেও হবে, রওনা দিলাম সেদিকে..অনেক কষ্টের পর পেলাম,, তবে এতক্ষন এর কষ্ট সার্থক শালপাতার থালায় অপূর্ব স্বাদের খাবার..খেয়ে রওনা দিলাম খান্দারানীর লেকের দিকে,গাড়ি যাচ্ছে জঙ্গল এর মধ্যে দিয়ে, কখনো উঁচু কখনো নিচু র সাথে কাঁদা তো আছেই কিন্তু পৌঁছানোর পরে আনন্দে মন ভোরে গেলো. জলে জঙ্গলে মিশে গেছে আর ক্লান্তি পড়ে রইলো(ঠিক যেমন আমে দুধে মিশে গেছে আর আঁটি পড়ে আছে )... অনেক টা সময় কাটানো হলো..|পরবর্তী গন্তব্য গাদরাসিনী পাহাড়, গাড়ি চললো সেইদিকে, মাথার উপরে কালো মেঘ.
যখন পৌঁছালাম ঘড়িতে 4:30 আর সাথে হালকা বৃষ্টি.
সকলের মতামত এই সময় পাহাড়ে ওঠা যাবে না.
কারণ বৃষ্টি আর অন্ধকার নামবে.. তবে আর কী গাড়ি ঘুরিয়ে ঝাড়গ্রাম হোটেল এর দিকে.হোটেল আগে থেকেই বুকিং করা ছিল.. হোটেল এ পৌঁছে রাতের খাবার খেয়ে ঘুম.. রাতে ঘুম ভালোই হলো..

 

আজ 8.8.2019 তারিখ সকাল 8.30
সকালে উঠে বৃষ্টি নেই, আবহাওয়া ভালো.
আজ ঘুরবো ঝাড়গ্রাম এর পাশে.. বেরিয়ে পড়লাম সবার প্রথম ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ী, কিন্তু বাইরে থেকেই দেখতে হলো
‌ভেতরে কাজ চলছে, তো ঢোকা যাবে না.
‌সেখান থেকে কনক দূর্গা মায়ের মন্দির, মন্দির এর চত্বর ঘুরলাম, কিন্তু অজ্ঞাতো অবস্থায় আমরা মন্দির পাশের জঙ্গলেই ঘুরতে পারিনি, এটা বড়ো ব্যর্থতা.যেখানে অনেক পশু পাখির বসবাস, আর এক রাশ অভিজ্ঞতা ছিল কিন্তু তা আর হলো না . যাইহোক সেখান থেকে বেরিয়ে পড়লাম এবার ডুলুং নদীর পালা!! পৌঁছে গেলাম ডুলুং নদীর কাছে, কী অপূর্ব সেই দৃশ্য আর কী ভালোবাসা নদীর রূপের.. মন মুগ্ধ.. অনেক টা সময় নদীর সাথে সময় কাটিয়ে এবার ছেড়ে যাওয়ার পালা! সত্যিই মনটা খারাপ করলো.. সামনেই চিল্কীগড রাজবাড়ী, কী অপূর্ব সব মন্দির, রাজপ্রাসাদ আর কী হাতের শিল্প খোদাই করে তৈরী. ভালোই লাগলো! এবার সবাই সবার মুখ চাওয়া ঘুরবো কোথায়?
‌মাথায় আসলো পাহাড়টা তে উঠলে কেমন হয়?
‌সবাই এক পায়ে রাজি ☺️☺️,
‌ব্যাস কোনো কিছু না ভেবেই গাড়ি ঘুরিয়ে ছুট, ওটাই যে বাকি.. রাস্তা তো অসাধারণ আর সাথে জনমানুষহীন জঙ্গল ..বেলপাহাড়ি বাজারের ঢোকার মুখে হোটেলে ভোজন সারলাম.
‌সোজা এবার পাহাড়ের দিকে, পৌঁছে গাড়ি রেখেই পাহাড়ে ওঠা শুরু.. ওরে বাঃবাঃ রে!! কি কষ্ট রে, অনেক দুর্গম পথ পার করে প্রথম পৌছালাম বাসুদেব ভগবান মন্দিরে, সেখানে একটু জিরিয়ে নিয়েই আবার শুরু একদম মাথায় উঠতে হবেই. অনেক দুর্গম পথ পার করে সব কষ্টের অবসান.
‌ সব কষ্ট যেন কোথায় মিলিয়ে গেলো!! কি অপূর্ব দৃশ্য আবার চোখে ভেসে উঠলো.
‌পাহাড়ের⛰️⛰️ উপর থেকে সারা গ্রামের দৃশ্য অসাধারণ, সবই যেন কেমন ছোট ছোট, অনেক ছবি তোলা.
‌বসে সৌন্দর্য কে উপলব্ধি আর মিষ্টি বাতাসে মন ভরানো... অনেক টা সময় কাটিয়ে এবার নিচে নামার পালা.. এবার সবার মন খারাপ কারণ যে এবার বাড়ি ফেরার পালা.সবকিছু কে বিদায় জানিয়ে বাড়ির পথে রওনা দিলাম. তবে আবার আসবো কথা দিলাম..
রাতে গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা টা অসাধারণ.. রাত 11 টা পার তখনো কলকাতা এয়ারপোর্ট ছেড়ে বিরাটির কাছে.. একে একে বাড়ি ফেরার সময় এসেছে..
একে অপরকে বিদায় জানিয়ে সকলে নিজের নিজের বাড়ি প্রবেশ করলাম... নিত্য জীবনে পা দিলাম আবার..সকালে সকলের কাজে যেতে হবে... রাত 12 টার মধ্যে সবাই বাড়ি..
ধন্যবাদ.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Ads Section